চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল শুরু থেকে ৫০ শয্যার হাসপাতাল হলেও পরে ১০০ শয্যায় উন্নীত হয়। তবে আসন সংখ্যা বাড়লেও বাড়ানো হয়নি প্রয়োজনীয় জনবল। জেলার একমাত্র হাসপাতাল হওয়ায় এখানে প্রতিনিয়ত রোগীর চাপ বেশি থাকে। সেবার মান ভালো হওয়ায় আশপাশের জেলা থেকেও রোগীরা চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে আসেন চিকিৎসা নিতে।
প্রতিদিন সাড়ে ৩০০ থেকে ৪০০ রোগী ভর্তি থাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে। বহিঃবিভাগ ও জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নেয় এক হাজারেরও বেশি রোগী। জনবল সংকটের কারণে সেবা দিতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্তব্যরত চিকিৎসক, নার্স ও স্বেচ্ছাসেবীদের।
তবে, চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সবচেয়ে বড় সমস্যা দর্শনার্থী। একজন রোগীর সঙ্গে চার থেকে পাঁচজন কখনও কখনও তার অধিক দর্শনার্থীও থাকে। এতে টয়লেটের উপর যেমন চাপ পড়ে বেশি তেমনই নোংরা হয় পরিবেশ।
আরো পড়ুন=>> মেহেরপুরে মাচা পদ্ধতিতে চিচিঙ্গা চাষ, দামে খুশি চাষিরা
দর্শনার্থীদের কোলাহলে রোগীদের নাজেহাল অবস্থা। হাসপাতালের পরিচ্ছন্ন কর্মীরা নিয়মিত পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার চেষ্টা করলেও অতিরিক্ত দর্শনার্থীদের কারণে তা ধরে রাখা সম্ভব হয়ে ওঠে না।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি ছিল ৬১ জন, মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে ৬৫ জন, পুরুষ সার্জারী ওয়ার্ডে ৫৫ জন, মহিলা সার্জারী ওয়ার্ডে ৩৭ জন, গাইনী ওয়ার্ডে ২০ জন, শিশু ওয়ার্ডে ২৩ জন এবং ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলো ১২ জন রোগী।
হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে, একজন রোগীর সঙ্গে একাধিক দর্শনার্থী। এতে, হাসপাতালের পানির যেমন অপব্যবহার হচ্ছে তেমনই রোগীর স্বজন ও তাদের সঙ্গে থাকা ছোট ছোট শিশুরা নোংরা করছে হাসপাতালের মেঝেসহ পরিবেশ। শুধু তাই না, অতিরিক্ত দর্শনার্থী থাকায় রোগীদের নিরাপত্তায় বিঘ্ন ঘটছে। সেকারণে মাঝে মধ্যেই ঘটে ছোট-বড় চুরির ঘটনা।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. ওয়াহিদ মাহমুদ রবিন বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, চুয়াডাঙ্গার মতো একটি বড় জেলার মধ্যে সরকারি হাসপাতাল মাত্র একটি। এখানে রোগীদের চিকিৎসা দেওয়ার জন্য আসন সংখ্যা সীমিত। কিন্তু রোগীর সঙ্গে এখানে প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত দর্শনার্থী প্রবেশে হাসপাতালের পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেয়ার সময় আমাদের অনেক বেগ পেতে হয়।
হাসপাতালের জনবল কম থাকার কারনে এমনিতেই আমরা হিমশিম খেয়ে যাচ্ছি। তার মধ্যে রোগীর সাথে একাধিক রোগীর স্বজন থাকে। এতে আমাদের চিকিৎসা দিতে আরো বেশি সমস্যা হয়। রোগীর স্বজন যদি কম থাকে তাহলে হাসপাতাল নোংরা কম হবে। পরিবেশ সুন্দর থাকবে। তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রত্যেককে সচেতন হতে হবে।
তাহলেই আমাদের হাসপাতালের পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখা সম্ভব। দর্শনার্থীদের জন্য কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি তত্বাবধায়কের কাজ, তিনি এই বিষয় টা দেখবেন।
এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ আতাউর রহমান কে একাধিক বার ফোন করেও তাকে ফোনে পাওয়া যায় নি।