বাবা দিবস উপলক্ষে ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড ‘গর্বিত বাবা অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি
বাবা দিবস উপলক্ষে ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড ‘গর্বিত বাবা অ্যাওয়ার্ড’ পেলেন ২৫ ভাগ্যবান বাবা। রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনের গ্র্যান্ড বল রুমে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় ২৫ জন কৃতী সন্তানের গর্বিত ২৫ জন নির্বাচিত এই বাবাদের সম্মানিত করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, সাবেক যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এমপি এবং প্রতিরা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহ এমপি প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গর্বিত বাবা ফাউন্ডেশনের সভাপতি, ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপকমিটির সদস্য দিলীপ কুমার আগরওয়ালা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি। সকল বাবাদের প্রতি সম্মান দেখিয়ে তিনি বলেন, আমরা শুধু মায়েদের কথা শুনতাম, আজ আমরা বাবাদের কথা শুনলাম। কারণ বাবাদের সামনে এনেছে গর্বিত বাবা ফাউন্ডেশন। সন্তানদের কাছে মা-বাবা দুজনেই সমান। কম-বেশি সেটা বোধ হয়, মেপে বোঝানো যাবে না। সন্তানের হৃদয় জুড়ে মা-বাবা একদম একইভাবে থাকে। মা যেমন আদর দিয়ে লালন-পালন করেন। ঠিক তেমনি সন্তানকে একদম প্রতিষ্ঠিত করে ঠিক তার সন্তানের জন্য একইভাবে হৃদয়ভরা ভালবাসা নিয়ে, তার যা করণীয় ঠিক একইভাবে করেন। বাবা দিবস নিয়ে আমার মনে হয়, আমি যতটুকু জানি- ভার্জিনিয়াতে একটা কয়লার খনিতে দূর্ঘটনা হয়েছিল। সেই দুর্ঘটনায় দুইশোর বা তার কাছাকছি মানুষ ওখানে চাপা পড়েছিল ও নিহত হয়েছিল। নিহতদের ছেলেমেয়েরা বা তাদের অন্যস্বজনেরা দিনের পর দিন সেখানে বসে তার বাবার জন্য আকুতি মিনতি করতো। তারপর থেকেই সেই দিবসটিকে ধরেই এই বাবা দিবস পালন হয়ে আসছে। তারপর থেকেই পৃথিবীর দেশে দেশে বাবা দিবস পালিত হয়। আমাদের বাংলাদেশেও আজ এই দিবসটি পালন করছে। এছাড়াও গর্বিত বাবা ফাউন্ডেশন এই দিবসটা পালন করছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তার বাবার স্মৃতিচারণ করে বলেন, আমার বাবা একজন কৃষিবিদ ছিলেন। এছাড়াও তিনি একজন সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন। আমরা কিভাবে লেখাপড়া করবো বা কিভাবে আমরা আরো সুন্দরভাবে লেখাপড়া করবো, তা নিয়ে সবসময় চিন্তা-ভাবনা করতেন। আমার মনে পড়ে- ঈদের সময় এলে আমরা তাকিয়ে থাকতাম, তিনি কখন বেতন পাবেন। আর কবে বলবেন- চলো তোমাদের নতুন জামা-কাপড় কিনে দেবো। আমরা তখন ছোট- আমাদের পছন্দের কাপড় কিনে নিয়ে আসতাম খুশিতে বাগ বাগ হয়ে। সেই স্মৃতিগুলো এখন আমাদের ভাবাই। তাই গর্বিত বাবা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড গর্বিত বাবা অ্যাওয়ার্ডে আসতে পেরে আমি আনন্দিত। কারণ সব বাবাদের এখানে সম্মানিত করা হচ্ছে।
গর্বিত বাবা ফাউন্ডেশন ও দিলীপ কুমার আগরওয়ালাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি, প্রতি বছরের মতো ধারাবাহিকতা বজায় রেখে এমন একটি আয়োজন করছেন। দেশে কত রকম অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠান হয়। তবে আমাদের বাবাদের নিয়ে এমন আয়োজন সত্যিই প্রশংসনীয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি আরও বলেন, জাতির পিতা, সর্বকালের সর্বশেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি। আর আমরা বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আরও এগিয়ে যাবো। স্মার্ট বাংলাদেশের প্রত্যয় নিয়ে এবং এ অনুষ্ঠানে আমাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তব্য শেষ করছি। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি, শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা আহসান উল্লাহ মাস্টারের সন্তান এবং সাবেক যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এমপি অসুস্থতার কারণে বক্তব্য না দিলেও পুরো অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া অনুষ্ঠানে আরেক বিশেষ অতিথি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহ এমপি উপস্থিত ছিলেন। এদিকে প্রধান অতিথির বক্তব্যের আগে ভার্চ্যুয়ালি বক্তব্য দেন চুয়াডাঙ্গার কৃতি সন্তান ও একসময়ের এদেশের বড় ব্যবসায়ী এবং দিলীপ কুমার আগরওয়ালার গর্বিত বাবা অমিয় কুমার আগরওয়ালা। এছাড়া ভার্চ্যুয়ালি বক্তব্য দেন চুয়াডাঙ্গার আরেক কৃতি সন্তান ও কৃতি ব্যবসায়ী দিলীপ কুমার আগরওয়ালার একমাত্র কন্যা আচল আগরওয়ালা। অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে দিলীপ কুমার আগরওয়ালা সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান এবং অনুষ্ঠানে উপ¯ি’ত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ সকল অতিথিদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। এর আগে অনুষ্ঠানে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের পর স্বাগত বক্তব্য রাখেন গর্বিত বাবা ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারি মেহেদী হাসান। এরপর পর্যায়ক্রমে ২৫জন গর্বিত বাবাকে উত্তরীয় পরিয়ে দেওয়া হয় সম্মাননা স্মারক ও গর্বিত বাবা অ্যাওয়ার্ড।
এ সময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত নির্বাচিত ২৫ জন বাবার কৃতি সন্তানেরা বলেন, আজকের এই অনুষ্ঠানে এসে সত্যিই ভালো লাগছে। যে বাবাদের জন্য আজ আমরা একেকজন এ সমাজে প্রতিষ্ঠিত, সেই সব বাবাদের সম্মানিত করা হচ্ছে। দিলীপ কুমার আগরওয়ালা মহোদয়সহ এমন একটি সুন্দর আয়োজনের সাথে জড়িত সকলকে শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
এছাড়া অনুষ্ঠানে অতিথি হিসাবে কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটির চেয়ারম্যান ও গর্বিত বাবা ফাউন্ডেশনের চীফ পেট্রোন ডক্টর চৌধুরী নাফিজ সরাফাত, জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সাবেক ফুটবলার আঃ গাফফার, ঢাকা ক্লাবের প্রেসিডেন্ট আশরাফুজ্জামান খান পুটন উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও বিভিন্ন পর্যায়ের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ গণমাধ্যমকর্মীরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।