সারা দেশের ন্যায় চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুরে বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস পালিত হয়েছে। জনসংখ্যা দিবসে এবারের প্রতিপাদ্যের বিষয় ছিল ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক উপাত্ত ব্যবহার করি, সাম্যের ভিত্তিতে সহনশীল ভবিষ্যৎ গড়ি’। দিবসটি উপলক্ষে চুয়াডাঙ্গায় আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গায় নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে পালিত হয়েছে বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস। দিবসটি উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বেলা ৩ টায় চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান শুরু হয়। এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রসাশক ও জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলোয়াত ও গীতা পাঠের মধ্যে দিয়ে শুরু হয়।
এ অনুষ্ঠানের সভাপত্বিত করেন মো: মিজানুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রসাশক ( সার্বিক), চুয়াডাঙ্গা। আলোচনা সভার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের সদর উপজেলার ফ্যামিলি প্লানিং অফিসার (ইউ এফ পি ও) মো: মোস্তাফিজুর রহমান ।
এ সভাটি সঞ্চালনা করেন চুয়াডাঙ্গা সদরের সহকারী পরিবার কর্মকর্তা মোছা: লতিকা ইয়াসমিন। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক ড.কিসিঞ্জার চাকমা।
আরো পড়ুন=>> আমঝুপি ইউপি উপ-নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দ
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, সরকার দেশের মানুষের জীবন-মান উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সরকার পরিকল্পিত জনসংখ্যা তথা পরিকল্পিত পরিবার গঠনের মাধ্যমে জনগণের সুযোগ, পছন্দ ও অধিকার নিশ্চিত করে প্রাণবন্ত ভবিষ্যৎ গড়তে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।
এক সময় জনসংখ্যা বিস্ফোরন হিসাবে গণ্য হতো আর এখন সেটা জনসম্পদে পরিণত হয়েছে। বিশ্বের অধিকাংশ দেশে বিশেষ করে জাপানে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমেছে কিন্তু আমাদের বাংলাদেশে তা বৃদ্ধি পাচ্ছে এটা আমাদের দেশের জন্য চমৎকার উপহার হিসাবে বলা য়ায় ।
সংখ্যার ভিত্তিতে বিবেচনা না করে সাম্যের ভিত্তিতে বিবেচনা করা উচিত। আমারা বিভিন্ন ইউনিয়নে ফ্যামিলি প্ল্যানিং কাজে আমরা সবসময় খোঁজ খবর রাখছি এর সাথে আপনাদেরকেও এগিয়ে আসতে হবে। পাশাপাশি আপনাদের জন্ম নিবন্ধন ও মৃত্যু সনদের প্রতি আপনাদের সচেতন থাকতে হবে।
প্রতিটি ইউনিয়নের কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে গ্রামীণ দরিদ্র ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীদের মাঝে স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দেয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। প্রাণবন্ত ভবিষ্যৎ গড়তে দেশের সকল সক্ষম দম্পতির কাছে তাদের চাহিদা ও পছন্দ অনুযায়ী পরিবার পরিকল্পনা এবং মা ও শিশুস্বাস্থ্য তথ্য ও সেবা পৌঁছে দিতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের বক্ষব্যাধি কনসালট্যান্ট ডা: ফাতেহ আকরাম দোলন সহ জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের কর্মকর্তাবৃন্দ। পরে চুয়াডাঙ্গা জেলা ও সদর উপজেলা পর্যায়ের বিভিন্ন ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠ কর্মী ও প্রতিষ্ঠানকে পুরষ্কার দেওয়া হয়।
চুয়াডাঙ্গা সদরের শ্রেষ্ঠ পরিবার কল্যাণ সহকারী মহাসিন বিশ্বাস,শ্রেষ্ঠ পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা আফরিন আরা, শ্রেষ্ঠ পরিবার কল্যাণ পরিদর্শক সাজেদুর রহমান, সদর উপজেলা শ্রেষ্ঠ পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক আখিরুল ইসলাম, সদর উপজেলা শ্রেষ্ঠ উপ সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার আলমগীর কবীর, জেলার শ্রেষ্ট ইউনিয়ন হিসাবে উথলী ও সদর উপজেলার শ্রেষ্ট ইউনিয়ন হিসাবে শংকরচন্দ্র এবং চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার শ্রেষ্ট ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র হিসাবে বেগমপুর ইউনিয়নকে পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে। এ অনুষ্ঠানের শ্রেষ্ঠ কর্মকর্তাদের হাতে সরজমিনে পুরস্কার তুলে দেন জেলা প্রসাশক ড. কিসিঞ্জার চাকমা।
মেহেরপুর অফিস জানায়, বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস উপলক্ষে মেহেরপুর জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের আলোচনা সভা ও শ্রেষ্ঠ পর্যায়ের মাঠকর্মী ও প্রতিষ্ঠানের মাঝে সনদপত্র ও সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা ও সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়, জেলা প্রশাসক মো শামীম হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ,-পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক।
বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শামীম ভূঁইয়া, সদর উপজেলা পরিকল্পনা কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম, মেহেরপুর মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ডা. রোমানা হেলালী জুশি, কাথুলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান রানা, পরিবার কল্যাণ সহকারী পাপিয়া খাতুন,পরে জেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ কর্মী ও প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সম্মাননা ক্রেস্ট ও সনদপত্র বিতরণ করা হয়।
এতে জেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ পরিবার কল্যাণ সহকারী হিসেবে কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিবার কল্যাণ সহকারী পাপিয়া খাতুন,পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা, কাথুলী ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের গুলশান আরা, শ্রেষ্ঠ পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক, কাথুলি ইউনিয়নের মুস্তাক আহমেদ, শ্রেষ্ঠ উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার, বুড়িপোতা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের ফিরোজা বেগম, শ্রেষ্ঠ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, কাথুলি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র।
শ্রেষ্ঠ ইউনিয়ন পরিষদ, কাথুলি ইউনিয়ন পরিষদ, শ্রেষ্ঠ উপজেলা পরিষদ, মুজিবনগর উপজেলা পরিষদ এবং শ্রেষ্ঠ মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র, মেহেরপুর মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র সম্মাননা ক্রেস্ট লাভ করেন।