যশোরের চৌগাছায় মা ভাত খেতে না দেয়ার অভিমানে বাপ্পি মোল্লা (১৭) নামে এক কিশোর আত্মহত্যা করেছেন। মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দুপুরে পারিবারিক কবরস্থানে বাপ্পিকে দাফন করা হয়। বাপ্পি মোল্লা উপজেলার হাকিমপুর ইউনিয়নের মাঠচাকলা গ্রামের জাহিদুল মোল্লার ছেলে।
এলাকাবাসী ও পারিবারিক সূত্র জানায়, বাপ্পির বাবা জাহিদুল ইসলাম একজন অবস্থাপন্ন মানুষ। বাপ্পিরা এক ভাই ও এক বোন। কিন্তু তা সত্ত্বেও জাহিদুল ইসলাম ও তার স্ত্রী ছেলে বাপ্পিকে লেখাপড়া না শিখিয়ে লোকের ক্ষেতে কামলা খাটতে পাঠায়। এ কাজ করতে বাপ্পি প্রায়ই অস্বীকৃতি জানায়। যেদিন বাপ্পি কাজে না যায় সেদিন তার মা তাকে ভাত খেতে দেয় না।
আরো পড়ুন=>> পবিত্র আশুরা আজ
এক পর্যায়ে রোববার শরীর অসুস্থ হওয়ায় বাপ্পি কাজে না গিয়ে বাড়িতে অবস্থান করে। এ কারণে বাপ্পির মা ওই দিন সকাল থেকে বাপ্পির ওপর বকাঝকা করে ভাত দেয়া বন্ধ করে দেয়। এদিন সন্ধ্যায় বাপ্পি তার মাকে বলে, ‘আমাকে যদি খেতে না দিস তাহলে তো আমার বিষ খাওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই’ এ কথা শুনে বাপ্পির মা বলে এখনই খা। টাকা না থাকলে আমার কাছ থেকে নিয়ে যা।
এ কথা শোনার পর পরদিন সোমবার সন্ধ্যায় বাপ্পি পাশের দেবিপুর বাজার থেকে ঘাস পোড়া কীটনাশক কিনে বাড়িতে বসে পান করে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে চৌগাছা উপজেলা সরকারি মডেল হাসপাতালে এবং পরে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নেন।
সূত্র আরো জানায়, সোমবার রাতেই হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়ার পরামর্শ দেন। ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিলে পথে বাপ্পি মারা যান।
মঙ্গলবার বাপ্পির লাশ বাড়িতে এলে উত্তেজিত গ্রামবাসী বাপ্পির মা ও মামাকে মারধর করে। পরে দুপুরে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল বাহার চৌধুরী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।