জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন নীলদলের দুই গ্রুপের দীর্ঘদিনের কোন্দল শিক্ষক সমিতিতে প্রকাশ্যে ফুটে এসেছে। দুই গ্রুপের রেষারেষির মাঝে পড়েছেন রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম।
তাকে কেন্দ্র করে এ কোন্দল উত্তপ্ত রূপ নিয়েছে।
জানা যায়, নীলদল একাংশ গ্রুপ (মনিরুজ্জামান-সিদ্দিকুর রহমান) থেকে শিক্ষক সমিতির সদস্য অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলামকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার করা হয়। এতে নীলদলের আরেক গ্রুপ (জাকারিয়া-আবেদ) ক্ষিপ্ত হয়। এর রেষ ধরে সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকে ড. আইনুল ইসলামের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশিত হয়। কিন্তু এ সংবাদ মিথ্যা ও বানোয়াট বলে দাবি করেন ড. আইনুল ইসলাম।
বুধবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. মহসিন রেজা স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষক সমিতির সদস্য ড. আইনুল ইসলামের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করা হয়েছে দাবি করে প্রতিবাদলিপি দেন।
এরপরেই সন্ধ্যায় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মাশরিক হাসান ও সহ-সভাপতি ড. মোমিন উদ্দিন স্বাক্ষরিত পাল্টা আরেকটি বিবৃতিতে জানানো হয়, আগের প্রকাশিত প্রতিবাদের সঙ্গে সকল সদস্য একমত নন ও সংশ্লিষ্ট নন। এমন পাল্টাপাল্টি বিবৃতিতে দুই গ্রুপের আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের মাঝে দীর্ঘদিনের কোন্দল সামনে আসে।
জবি শিক্ষক সমিতির সদস্য অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান বলেন, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী একমাত্র শিক্ষক সমিতির সভাপতিই সাধারণ সভা বা জরুরি সভা আহ্বান করতে পারেন। মিটিংয়ে কমিটির ১৫ সদস্য সকলে উপস্থিত ছিলেন। সেখানে সংখ্যা গরিষ্ঠ সদস্যদের সিদ্ধান্তে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। পরে দুয়েকজন মিলে হঠাৎ করে কীভাবে মিটিং ডাকলেন ও কেন বিবৃতি দিলেন আমরা কমিটির কেউ জানি না।
এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মাশরিক হাসান বলেন, আমাদের কিছু মতামত ছিল সেগুলো গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। এজন্য শিক্ষক সমিতির নামে প্রথম যে বিবৃতি প্রচার হয় সেখানে আমার স্বাক্ষর ছিল না। তাই আমরা পৃথক বিবৃতি দিয়ে আমাদের অবস্থান পরিষ্কার করেছি। সবার অনুমতি নিয়ে মিটিং ডাকা হয়েছে কিনা প্রশ্নে তিনি বলেন, এটা মিটিং ছিল না। সেক্রেটারিকে বাদ দিয়ে বিবৃতি দেওয়ায় প্রতিবাদ করা হয়েছে।
এদিকে বিপক্ষ গ্রুপের দ্বন্দ্বে পড়ে নিজের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার হয়েছে মন্তব্য করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো পদে আসীন হলেই বিপক্ষ গ্রুপ আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচারে নামে। কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের যে ঘটনার কথা বলা হচ্ছে, ওই ঘটনার তদন্ত রিপোর্ট অনেকের কাছে আছে। সেখানে দেখবেন ঘটনার সঙ্গে আমার নামই নেই। আমি সাবেক ট্রেজারার ছিলাম। রেজিস্ট্রার পদে আসতে চাইনি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্তে আমাকে দায়িত্ব নিতে হয়েছে।
এদিকে দুই গ্রুপের কোন্দলের উত্তাপ ছড়াচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও। নীল দলের একাংশের সাধারণ সম্পাদক ছিদ্দিকুর রহমান ফেসবুক পোস্টের এ কমেন্টে লেখেন, একটি স্বার্থান্বেষী মহলের অপচেষ্টা।