নামাজে সুরা ফাতেহার পর ‘আমিন’ বলা সুন্নতে মুয়াক্কাদা। জামাতে নামাজের ক্ষেত্রে নিয়ম হলো- ইমাম সুরা ফাতেহা শেষ করলে মুক্তাদি ‘আমিন’ বলবে। আমিন আস্তে ও জোরে বলা—দুটোর পক্ষেই শরিয়তের দলিল রয়েছে। কোনো ইমাম আস্তে বলাকে উত্তম বলেছেন, আবার কারো মতে জোরে বলা উত্তম। মুজতাহিদ ইমামগণ বিষয়টিতে জায়েজ-নাজায়েজ নিয়ে মতবিরোধ করেননি, করেছেন উত্তম-অনুত্তম নিয়ে। ইবনুল কাইয়্যিম (রহ) বলেন, ‘এটা ইখতিলাফে মুবাহর অন্তর্ভুক্ত, যেখানে কোনো পক্ষেরই নিন্দা করা যায় না। যে ব্যক্তি কাজটি করছে তারও না, যে করছে না তারও না। এটা রাফে ইয়াদাইনের মতো বিষয়।’ (জাদুল মাআদ: ১/৭০, মিসর ১৩৬৯ হি, কুনুত প্রসঙ্গ)
প্রশ্ন হলো- মনে মনে ‘আমিন’ বলা যাবে কি না। এর উত্তরে ফুকাহায়ে কেরাম বলেন, আমিন আস্তে বলা যায়, কিন্তু মনে মনে বলা যায় না। আস্তে আর মনে মনে দুটো এক কথা নয়। বরং নামাজের অন্যান্য তাসবিহের মতো ‘আমিন’ও সহিহ-শুদ্ধভাবে উচ্চারণ করতে হবে।
আমিন (আস্তে কিংবা জোরে) বলা অনেক ফজিলতপূর্ণ আমল। এক হাদিসে এসেছে, ‘নবী (স.) বলেন, ‘যখন ইমাম বলে غير المغضوب عليهم ولا الضالين তখন তোমরা বলো আমিন। কারণ যার কথা ফেরেশতাদের কথার সাথে মিলবে তার অতীতের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।’ (সহিহ বুখারি: ৭৪৬)
অতএব, আমিন বলার ফজিলত লাভ করতে চাইলে তা স্পষ্টভাবে মুখে উচ্চারণ করতে হবে। সেটি আস্তে হোক কিংবা জোরে। কোনোভাবেই মনে মনে বলা চলবে না। কারণ আমিন বলা নিয়ে যত বর্ণনা এসেছে, সবগুলোতেই আমিন মুখে বলতে বলা হয়েছে। সেই নির্দেশনা মানলেই ফজিলত লাভ করা যাবে। অন্যথায় নয়।
আরো পড়ুন>> নবিজির (সা.) সুমহান আদর্শ
যারা অবহেলার কারণে কিংবা না-জানার কারণে মনে মনে পড়েন, তারা মনে রাখবেন, আমিন মনে মনে বলার পদ্ধতিটি সংশোধনযোগ্য। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে যেকোনো বিষয়ে সুন্নত কোনটি তা জেনে নেওয়ার এবং সেই অনুযায়ী আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।