স্বামী-স্ত্রীকে হত্যা: তিনজনের ফাঁসি

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় আলোচিত স্বামী- স্ত্রীকে জবাই করে হত্যার দায়ে তিনজনের ফাঁসির আদেশ ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করে রায় দিয়েছেন আদালত।

একইসাথে আরো একজন আসামিকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (২য়) আদালতের বিচারক মাসুদ আলী। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন আলমডাঙ্গার আসাননগর গ্রামের ক্লাবপাড়ার বজলুর রহমানের ছেলে সাহাবুল হক (২৪), একই গ্রামের শেষ পাড়ার পিন্টু রহমানের ছেলে রাজিব হোসেন (২৫) ও মাঝের পাড়ার মাসুদ আলীর ছেলে বিদ্যুত আলী (২৩)। কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আসাননগর স্কুল পাড়ার তাহাজ উদ্দীনের ছেলে শাকিল হোসেন (২৩)। আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ২০২২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর আলমডাঙ্গা পৌর শহরের পুরাতন বাজার পাড়ার বাড়ি থেকে বৃদ্ধ দম্পতি নজির মিয়া (৭০) ও ফরিদা বেগমের (৬০) হাত পা মুখ বাঁধা রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়।

এর পরদিন ওই বৃদ্ধ দম্পতির মেয়ে ডালিয়ারা পারভীন শিলা অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। এর চারদিন পর হত্যাকারী সন্দেহে ওই চার আসামিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে আসামিরা হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি ওই চার আসামিকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক শিহাব উদ্দীন। চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়, বৃদ্ধ নজির আলী ছিলেন একজন বালু ব্যবসায়ী। আর আসামি সাহাবুল হক ছিলেন তার বালু ব্যবসায়ে চলিত যানের ড্রাইভার। ড্রাইভার হওয়ার সুবাদে ওই বৃদ্ধ দম্পতির বাড়িতে যাওয়া আসা ছিল ড্রাইভার সাহাবুলের। এ সুযোগে ওই বাড়িতে কোথায় টাকা পয়সা থাকে তাও জানতো আসামি। পরিকল্পনা মাফিক আসামিরা ওই দম্পতির বাড়ি থেকে নগদ টাকা লুট করতে বালু কেনার নাম করে বাড়িতে প্রবেশ করে। এ সময় বৃদ্ধা ফরিদা বেগম বাধা দিলে তাকে প্রথমে শ্বাসরোধ এবং কুপিয়ে হত্যা করে এবং বৃদ্ধ নজির মিয়াকেও হত্যা করে আসামিরা। লুট করে নিয়ে যায় নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার ও একটি মোবাইলফোন। মামলায় মোট ১৯ জন সাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহণ এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে বিচারক এ রায় ঘোষণা করেন।
মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এপিপি অ্যাডভোকেট গিয়াস উদ্দিন জানান, এ ঘটনায় সরাসরি হত্যার সাথে জড়িত তিনজনকেই মৃত্যদণ্ডাদেশ দেয়া হয়েছে এবং লুট করে নেয়া মোবাইলফোনের ক্রেতাকে দুই বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়েছে। মামলার রায়ে বাদি পক্ষ সন্তুষ্ট।

ড্রাইভার হওয়ার সুবাদে ওই বৃদ্ধ দম্পতির বাড়িতে যাওয়া আসা ছিল ড্রাইভার সাহাবুলের।

মামলার আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোখলেছুর রহমান জানান, শুধুমাত্র জবানবন্দির ওপর ভিত্তি করেই মামলার কার্যক্রম পরিচালিত হয় এবং রায় ঘোষণা করা হয়। এ রায়ে বিবাদীরা সন্তুষ্ট নন। তাই উচ্চ আদালতে আপিল করার প্রস্তুতি চলছে।

www.khaskhobor24.com

Welcome to WordPress. This is your first post. Edit or delete it, then start writing!