চৈত্রের খরতাপে কদর বেড়েছে আখের রস ও শরবতের

সপ্তাহব্যাপী চৈত্রের প্রচণ্ড খরতাপে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। মেহেরপুরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছে ৪২.২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।

ঘর থেকে বের হলেই গরমে ঘেমে-নেয়ে নাজেহাল অবস্থা মানুষের।
যেকোনো মিষ্টি খাবারের রেসিপিতে থাক, প্রাকৃতিক ও নিরাপদ জিরোক্যাল-এর মিষ্টি স্বাদ

সড়কের মোড়ে, মার্কেটের সামনে, রাস্তার পাশে লেবু পানি, আখের রস, বেলের শরবত ও ডাব বিক্রি করছেন ভ্রাম্যমাণ দোকানিরা। জেলা শহর, গাংনী ও মুজিবনগর উপজেলা শহরে শরবত ও আখের রসের ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলোতে সাময়িক প্রশান্তি আর তৃষ্ণা মেটাতে ঝুঁকছে মানুষ। তবে এসব পানীয় এড়িয়ে চলতে পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।

আখের রস ও শরবত বিক্রেতারা জানান, তীব্র গরমে কদর বেড়েছে আখের রস, লেবুর শরবত ও ডাবের।

গত এক সপ্তাহজুড়ে মেহেরপুর জেলায় গরমের তীব্রতা বেশি অনুভূত হওয়ায় ফুটপাতগুলোতে হরহামেশাই ক্লান্ত পথিকদের নানান ধরনের শরবত ও জুস কিনে পান করতে দেখা যাচ্ছে।

গত শনিবার মৌসুমের সর্বোচ্চ ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে মেহেরপুরে। চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান জানান, মাঝারি তাপদাহের পর শনিবার তীব্র তাপদাহ শুরু হয়েছে।

গতকাল দুপুরে মেহেরপুর জেলা ও গাংনী উপজেলা শহরে এলাকায় প্রচণ্ড তাপদাহে পিপাসা মেটাতে শরবতের দোকানগুলোতে ভিড় করতে দেখা যায় তৃষ্ণার্ত মানুষকে। এসব এলাকার ফুটপাতে রয়েছে বেশ কয়েকটি শরবতের দোকান। কোনো কোনো দোকানে বিক্রি হচ্ছে বেলের শরবত, আবার কোথাও লেবুর শরবত। পাশাপাশি বিক্রি হচ্ছে ডাব ও আখের রস। এছাড়াও পিপাসা মেটাতে বিভিন্ন কোম্পানির ঠান্ডা কোমল পানীয় ও মিনারেল ওয়াটার কিনে পান করতে দেখা গেছে।

গাংনী উপজেলা শহরের বড়বাজার এলাকার লেবুর শরবত ও আখের রসের দোকানগুলোতে দেখা গেছে ভিড়। বাসের অপেক্ষায় থাকা রহিমা খাতুন তার ছেলে আয়মানকে লেবু শরবত পান করাচ্ছেন। তিনি বলেন, অস্বাস্থ্যকর জেনেও এটি পান করাতে বাধ্য হচ্ছি। কারণ গরমে ছেলেটার গলা শুকিয়ে গেছে।

আখের রসের দোকানে বোতল ও পলিথিন হাতে দাঁড়িয়ে আছেন আব্দুর রহমান, সেলিনা খাতুন ও শাহাজান আলী। তারা বলেন, এই গরমে ইফতারের পর আখের রস পান করি, নয়তো শরীর কড়া হয়ে যাবে। তাই, আখের রস নিয়ে যাচ্ছি।

গাংনী উপজেলা শহরের বড়বাজার এলাকার শরবত বিক্রেতা সাদ্দাম হোসেন বলেন, যত গরম পড়বে আমাদের তত বিক্রি বাড়বে। কয়েকদিন যাবৎ গরম পড়ছে। প্রতিদিন ৬/৭ হাজার টাকার শরবত বিক্রি হয়। রমজান শেষ হলে বিক্রি আরও বাড়বে।

আখের রস বিক্রেতা শহিদুল ইসলাম বলেন, গরম পড়ার সাথে সাথে আমাদের বেচাবিক্রি বেড়েছে। প্রতিদিন ৭/৮ হাজার টাকার রস বিক্রি করছি।

ডাব বিক্রেতা সাবান আলী জানান, ডাবের প্রচুর চাহিদা। এই গরমে মানুষ ডাবের প্রতি ঝুঁকছেন।

অন্যদিকে তীব্র গরমে বাড়ছে নানান রোগবালাই। বিশেষ করে ডায়রিয়া, জ্বর, শ্বাসকষ্টের রোগীর সংখ্যা বেড়েছে তুলনামূলক বেশি। মেহেরপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. জমির মোহাম্মদ হাসিবুস সাত্তার বলেন, এই গরমে প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। পিপাসা মেটাতে ফুটপাতের শরবত ও পানি পান থেকে বিরত থাকতে হবে।