পরিবারের সচ্ছলতা ফেরাতে দুবাই পাড়ি জমিয়েছিলেন চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় উপজেলার কুমারী ইউনিয়নের দরিদ্র ভ্যানচালক তছের আলীর মেয়ে কাজলী খাতুন (২৫)। ১৯ এপ্রিল শুক্রবার কর্মস্থলেই খুন হয়েছেন তিনি। এদিকে, কাজলীর মৃত্যুর খবর পেয়ে তার পরিবারের নেমে এসেছে শোকের ছায়া। কবে লাশ দেশে ফিরবে, এখন সেই অপেক্ষায় দিন গুনছেন কাজলীর পরিবারের সদস্যরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) কাজলীর এক নারী সহকর্মী দুবাই থেকে মোবাইলে কাজলীর পরিবারকে মৃত্যুর খবর দেন। প্রবাসে কাজলীর মৃত্যুর খবর পেয়ে তার পরিবারের সদস্যরা দিশেহারা হয়ে পড়েন। খবর পাওয়ার পর থেকে বারবার কাজলীর মা ও বাবার মেয়ের শোকে পাগল প্রায়। কান্না করতে করতে মাঝে মাঝে জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন নিহত কাজলীর মা ও বড় বোন।
নিহত কাজলীর পিতা তছের আলী আজকের খাসখবরকে বলেন, কাজলী তার মেজো মেয়ে। কাজলী ও তার ছোট বোন ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকরি করতেন। সেখান থেকে বাড়িতে কাউকে কিছু না জানিয়েই তিনি ৭ মাস আগে দুবাই চলে যান। একদিন কাজলী মোবাইলে জানান সে দুবাইয়ে পাড়ি জমিয়েছে। ভালো কাজও পেয়েছেন সেখানে। এরই মধ্যে ৬ মাস পর দুবাই থেকে গত ৬ রোজায় ঈদের ছুটিতে বাড়িতে আসেন কাজলী। কিন্তু পরিবারের সাথে ঈদ না করেই কর্মস্থলে ফিরে যান তিনি। এ মাসেও বাড়িতে টাকা পাঠানোর কথা ছিল।
তিনি আরও জানান, গত ১৯ এপ্রিল শুক্রবার দুবাই থেকে কাজলীর সহকর্মী পরিচয়ে এক নারী মোবাইল ফোনে কালজীর মৃত্যুর বিষয়টি জানান। সে আমাদেরকে জানায় সুপারভাইজারের নিকট বেতনের বেশকিছু টাকা পেতেন কাজলী। টাকা চাওয়া নিয়ে সুপারভাইজারের সঙ্গে কাজলীর কথা কাটাকাটি হয়। এসময় সুপারভাইজার লোকমান হোসেন ওরফে সাইকো একটি কাঁচের বোতল দিয়ে কাজলীর মাথায় আঘাত করলে তার মৃত্যু হয়।
কাজলীর পিতা আরও বলেন, ওই সুপারভাইজারের শ্বশুর বাড়ি টাঙ্গাইল। কিন্তু তার বাড়ি কোথায় তা জানেন না তিনি। তিনি দাবী করেন, কাজলীকে যে সুপারভাইজার খুন করেছে, তার বিচার চাই। সরকার যতদ্রুত সম্ভব আমার মেয়ের লাশ ফিরিয়ে দিক।
এ বিষয়ে কুমারী ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাঈদ পিণ্টু বলেন, দুবাইয়ে কর্মস্থলে কোম্পানির সুপারভাইজারের হাতে কাজলী খাতুন খুন হয়েছে বলে জেনেছি। ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। তার লাশ দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসার জন্য সকল প্রকার আবেদন করা হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব লাশ দেশে নিয়ে আনতে চেষ্টা করা হচ্ছে।