ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ

চলছে বালু উত্তোলন, গাড়িতে চলছে পরিবহণ

খাসখবর প্রতিবেদক: আলমডাঙ্গা উপজেলার নাগদাহ গ্রামের আব্দুল গাড়ি মাঠের মধ্যে একটি পুকুর থেকে প্রায় ১৫-২০ দিন ধরে ড্রেজার দিয়ে বালু তোলা হচ্ছে। ইতিমধ্যে পুকুরের আশপাশে ভাঙন দেখা দিয়েছে। যে কোনো সময় আশপাশের ফসলি জমির বিশাল অংশ ধসে পড়তে পারে। শুকনো মৌসুমে চাষাবাদের ফসলি জমির পানি শুকিয়ে যাচ্ছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অপরিকল্পিতভাবে কৃষিজমি ভরাট করে, পুড়নো পুকুরের তলদেশ থেকে ৪০ থেকে ৫০ ফুট গভীরে ড্রেজার ম্যাশিনের পাইপের মাধ্যমে উপরিভাগে বালুর স্তুপ করা হচ্ছে। একদিকে চলছে বালু স্তুপের কাজ, অন্যদিকে চলছে ট্রেক্টার ও স্ট্রেয়ারিং গাড়িতে বালু পরিবহণ। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে তা পরিবহনের জন্য পাকা ও কাঁচা সড়ক ব্যবহার করা হচ্ছে। বালু বোঝাই এ সব ভারী যানবাহন চলাচল করায় রাস্তাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে জিকে ক্যানেলের পুরাতন সেতুটি। এতে ভোগান্তি পোহাচ্ছে এলাকার সর্বস্তরের জনসাধারণ।


জানা গেছে, উপজেলার নাগদাহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এজাজ ইমতিয়াজ বিপুল জোয়ার্দ্দার তার পরিষদের গ্রামীণ সড়ক নির্মাণের জন্য ১৫-২০ দিন যাবৎ পুকুরের গভীর থেকে বালু তুলে স্তুপ করছে। তার চাহিদা অনুযায়ী কয়েকগুণ বেশী। এসব বালু উত্তোলন সরকারি ভাবে নিষিদ্ধ থাকলেও চুয়াডাঙ্গা সদরের খেজুরতলা গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রাজ্জাকের ইঞ্জিন চালিত ড্রেজার ম্যাশিনের মাধ্যমে পুকুরের ৪০-৫০ ফিট গভীর থেকে এসব বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে ওই এলাকার গভীর থেকে বিভিন্ন ফসলের জমির নিচ থেকে বালু উঠে আসছে। এতে বর্ষা মৌসুমে ফসলি জমিতে ফাটলসহ ধসে পড়ার শঙ্কার করছে স্থানীয় কৃষকেরা। তবে চেয়ারম্যান এজাজ ইমতিয়াজ বলছেন, যারা বালু উত্তোলন করছেন তারা আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্নিগ্ধা দাসের মৌখিক অনুমতির ভিত্তিতেই তুলছেন।

এই বালু নাগদাহ ইউপিসহ উপজেলার বিভিন্ন ইউপির সড়কসহ উন্নয়নমূলক কাজের ব্যবহৃত হবে। তবে বালু উত্তোলনের বিষয়টি জানেন না ইউএনও স্নিগ্ধা দাস। তিনি বলেন, আমি কাউকে মৌখিক অনুমতি দেয়নি। আমি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব। নাম না প্রকাশের শর্তে স্থানীয় এক যুবক বলেন, নাহদাহ ইউপির চেয়ারম্যান এজাজের নেতৃত্বে জুড়ান মণ্ডলের পুকুর থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে আশপাশের থাকা ফসলী জমি হুমকির মুখে পড়েছে। নাগদাহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এজাজ ইমতিয়াজ বিপুল বলেন, পুকুর মালিক নিজেই বালু উত্তোলন করছেন। আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শনও করেছি। কোন ফসলী জমি হুমকির মুখে পড়বেনা।


তিনি আরও বলেন, আলমডাঙ্গা ইউএনও’র মৌখিক নির্দেশনায় বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। আমার ইউনিয়নসহ বেশ কিছু ইউনিয়নে রাস্তাঘাটের উন্নয়নমূলক কাজ করা হবে। ড্রেজার মেশিনের মালিক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, গত ১ সপ্তাহ যাবত এখান থেকে বালু তোলা হচ্ছে আমার মেশিনের মাধ্যমে। কারা বালু উত্তোলন করছে জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যান।


এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্নিগ্ধা দাস বলেন, বালি উত্তোলন সম্পূর্ণ অবৈধ। কাউকে বালি উত্তোলনে অনুমোদন দেওয়া হয়নি। যদি কেউ অবৈধ ভাবে বালি উত্তোলন করে, তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।